চিনে মাটির তলা থেকে জেগে উঠল ১০০০ বছরের পুরনো মন্দির

অতীতকে হয়তো আমরা সকলেই ভুলে যাই, তবে যদি হঠাৎ সেই অতীত আমাদের সামনে এসে দরজায় কড়া নাড়ে, তাহলে ? চমকে উঠতেই হবে তাই না ৷ এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল চিন ৷

চিনা এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সেদেশের প্রত্নতাত্ত্বিকরা একটি বিখ্যাত মন্দির খুঁজে পেয়েছেন। চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমে সিচুয়ান প্রদেশে প্রায় ১০০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে ওই মন্দির। বহু রাজপরিবারের গতিবিধি পরির্বতনের জেরে মন্দিরেরও মালিকানায় বহুবার হাতবদল হয় বলে জানা যায় ৷ চেগডু শহরের অন্তর্গত একটি বিখ্যাত মন্দির ছিল এটি ৷ ফুগানের মন্দির নামে পরিচিত ওই মন্দিরটি  পূর্ব জিন রাজবংশের অধীনে ৩১৭ থকে ৪২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল। পরবর্তিকালে ডক্সন নামে একটি বিখ্যাত তং রাজবংশ এই মন্দিরের দায়িত্ব পায়, যাদের আমলে ৬১৮ থকে ৯০৭  খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল মন্দিরটি। সবশেষে দক্ষিণাঞ্চলীয় গান রাজপরিবার ১১২৭ থেকে ১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ মন্দিরের ঐতিহ্য বজায় রাখে ৷

সূত্রের খবরানুযায়ী জানা যায়, একসময় খরা শেষ করার জন্য বৃষ্টির প্রার্থনা নিয়ে মন্দির সামনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করা হয় এবং  প্রার্থনার শেষে স্বর্গ হতে শোনা যায় বৃষ্টির আগাম পূর্বাভাস। ফলে মন্দিরটি চৈনিক ভক্তগনের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শোনা যায়, এর পর থকেই মন্দিরটির নাম করণ হয় “ফুয়ান”, যার মানে “আশীর্বাদ অনুভব করা।”

জনপ্রিয় তং রাজবংশের কবি লিউ ইয়ুসি মন্দিরটির পুনর্নির্মাণের স্মরণে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন, যেই কবিতার ফলে এই মন্দিরের স্বর্গীয় চেহারা বর্ণনা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই সময় মন্দিরটির যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, সেই কথাও কবিতাটিতে রয়েছে ।

পুরাতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে ১,০০০ টিরও বেশি শিলালিপি এবং পাথরের ভাস্কর্যের প্রায় ৫০০ টি টুকরা এবং খিলানযুক্ত গ্লাসেড টাইলসের ধ্বংস স্তুপ রয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র মন্দিরের এলাকার একটি অংশ খনন কার্যের কাজ চলছে। ই লি, যারা খনন প্রকল্প নেতৃত্বে রয়েছেন, তাঁরা জানান যে, মন্দিরের ভিত্তি, আশেপাশের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, কুয়ো, রাস্তাঘাট এবং তখনকার বিভিন্ন প্রকার ঐতিহ্য ইতি মধ্যই খুঁজে পেয়েছেন তারা । খননকালে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা শং ও ঝৌ রাজবংশের ১৬০০ থকে ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মন্দিরের কাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় ৮০ টি প্রাচীন সমাধি পাওয়া যায়।

মন্দিরের আশেপাশে, তারা গান থেকে মিং রাজবংশ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সামগ্রী, পাত্রে এবং বিল্ডিং তৈরির উপকরণ খুঁজে পেয়েছেন।

চিনের সুয়া এবং টং রাজবংশের সময় চেন্জু একটি অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে। চেংদু সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ওয়াং ইই বলেন, সেই সময়ে বৌদ্ধের বিস্তার সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য মন্দিরটির আবিষ্কার ব্যাপকভাবে অবদান রাখতে পারে।
Share on Google Plus

About Unknown

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment